সংবাদ শিরোনাম
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত মাদক ও ইলেকট্রনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে ছেলে মেয়েরা মেধা কার্যক্রম থেকে সরে গিয়েছে: খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি ওস্তাদ আশীষ খাঁ মারা গেছেন আবারও কমলো স্বর্ণের দাম আসছে তীব্র শীত, কমছে তাপমাত্রা সরাইলে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের আনন্দ মিছিল শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার রেল যাতায়াত, যানজট ও লোডশেডিং সমস্যা সমাধানের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাগরিক ফোরামের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কক্সবাজারে লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভিযানে ৬ জন আটক
কমলগঞ্জে চা-শ্রমিকদের সন্তানদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন সন্তোষ রবিদাস

কমলগঞ্জে চা-শ্রমিকদের সন্তানদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন সন্তোষ রবিদাস

শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
সমাজে পিছিয়ে পড়া চা জনগোষ্ঠীর সন্তান সন্তোষ রবিদাস। নিজের যোগ্যতায় ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে সুযোগ পেলেই বাড়ি ফিরে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র চা শ্রমিক সন্তানদের জীবনমান উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করছেন। তাদের নিয়ে করেন সচেতনতামূলক সভা ও মতবিনিময়। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগরের ফাঁড়ি বাগান কানিহাটি চা-বাগানে শিক্ষার্থীদের আলো হয়ে দাঁড়িয়েছেন সন্তোষ রবিদাস।এখন সন্তোষ কানিহাটি চা-বাগানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছেন। করোনা সংক্রমণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারনে সে চা-বাগান সপ্তাহে ৫দিন শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন।

চা-শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন ঢাবি শিক্ষার্থী সন্তোষ রবিদাস।

সপ্তাহে একদিন নিয়েছে তাদের পরীক্ষা। একদিন থাকতো সমাজের নানা সমস্যা, সম্ভাবনা, ধর্মীয় আচার রীতি ও স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে আলোচনা। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় শিক্ষা উপকরণ। চা বাগানের মাঝে আরও পিছিয়ে পড়া রবিদাস সম্প্রদায়ের সাবেক চা শ্রমিক সত্যনারায়ণ রবিদাস ও মা কমলি রবিদাসের ছেলে সন্তোষ। মাত্র ৬ মাস বয়সে বাবাকে হারিয়ে মায়ের কষ্টের আয়ে বড় হয়েছে সে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হয়ে অনেক কষ্ট করে ঢাকায় টিউশনী করে তার পড়াশোনা চালিয়েছে। বর্তমানে এমবিএ ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছে সে।তার পড়ালেখার পথচলা ছিল খুবই কষ্টের। আর এজন্যই সে তার জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই তৈরী করার কাজ করছে। অন্ধকারে তাদেরকে আলো দেখাচ্ছে। আলাপকালে সন্তোষ জানায়, তার মা আগে দৈনিক মজুরি পেতেন ৮৫ টাকা। এখন পান ১২০ টাকা। মায়ের এ আয়ে তাদের সংসার চালানো কঠিন ছিল। তিনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কিস্তির টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে তার খরচ চালিয়েছেন। আর ঋণের কিস্তি পরিমোধে চা বাগানের কাজের পাশাপাশি পাহাড়ি ছড়ায় বালু উত্তোলনেরও কাজ করেছেন মা। সংসারে মা ছেলে আলু সিদ্ধ করে খেয়ে কত রাত কাটিয়েছে। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটা ছিল খুবই কষ্টের।
তার মতে চা বাগানে এখন আর আগের অবস্থা নেই। বর্তমানে শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্যানিটেশনের সুবিধা অনেকটা বেড়েছে। খরচ ও প্রতিযোগিতাও অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ এখনও সঠিকভাবে গ্রহন করতে পারছে না চা জনগোষ্ঠীর সন্তানরা। তাই সে নিজের চা বাগানে গড়ে তুলেছেন শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম। “একে অন্যকে সাহায্য কর” এ স্লোগান নিয়ে চা বাগানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালাচ্ছেন তার কার্যক্রম। আবার মাঝে মাজে বড় আকারের আলোচনাসভাও সচেতনতামূলক সভা করেন চা বাগান নাচ ঘরে।
এতে করে চা শ্রমকি সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের শিক্ষার উন্নয়ন ও নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে চা শ্রমিক সন্তান শিক্ষার্থীদের। একেবারে নিজ উদ্যোগে চলছে এ কার্যক্রম। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে তার কার্যক্রম আরও বৃহৎ হতে পারে বলে সন্তোষ মনে করেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com